রাজধানীর তুরাগে উবার চালকের যোগসাজশে ইতালিয়ান নাগরিকের পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল ছিনতাই করে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র। এই ঘটনার ভুক্তভোগীর অভিযোগে মালামাল উদ্ধারসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- মো. খোরশেদ আলম (২৮) ও মো. শাহিন মিয়া (২২)।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) তুরাগ থানা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ছিনতাই হওয়া মালামালসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান।
তিনি জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে ইতালিয়ান নাগরিকের পাসপোর্ট, টাকাসহ সব মালামাল উদ্ধারসহ ঘটনায় জড়িত দুই পেশাদার ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিসি রওনক জাহান জানান, গত রবিবার ভোর ৪টার দিকে তানিয়া মোহাম্মদ শেখ নূর ইতালি থেকে একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তিনি বিমানবন্দরের সামনে থেকে একটি উবার মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ১৯নং সেক্টরের প্রবাসী হোস্টেলে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। মোটরসাইকেল চালক ইতালিয়ান নাগরিককে হোস্টেলে না নিয়ে তুরাগ থানাধীন ১৫নং সেক্টরের ১নং মেট্রোরেল স্টেশন এলাকায় ব্রিজের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে তার অপর এক সহযোগীর সহায়তায় ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ইতালিয়ান পাসপোর্ট, একটি আইফোন ১৩ মোবাইল, একটি আইফোনের চার্জার, একটি ম্যাকবুক চার্জার, ইতালিয়ান পরিচয়পত্র, ব্যাংক কার্ড, ইতালিয়ান বই ও নগদ ৫০ ইউরো ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় তানিয়া মোহাম্মদ শেখ নূরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তুরাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় জানিয়ে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাইকারী চালক মো. খোরশেদ আলমকে শনাক্ত করা হয়। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি বিকাল সোয়া ৫টার দিকে তুরাগ থানার পাকুরিয়া হাসুর বটতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে খোরশেদকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১১টার দিকে তুরাগ থানার পাকুরিয়া এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে মো. শাহিন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি বলেন, গ্রেফতার দুজন পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা উবার মোটরসাইকেল চালকের বেশ ধারণ করে নির্জন জায়গায় নিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে যাত্রীদের টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতো বলে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছিনতাই হওয়া মালামাল ফিরে পেয়ে ইতালিয়ান নাগরিক তানিয়া মোহাম্মদ ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট, টাকা, জিনিসপত্র সব কিছু হারিয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ আমার মালামাল উদ্ধার করে ফিরিয়ে দিয়েছে, আমি ভাগ্যবতী। আমার দেখা সে সবচেয়ে ভালো পুলিশ অফিসার।’